নিন্দুক সমালোচক এক নয়

সারা বছর ধর্মের সমালোচনা করে ঈদের নামাজ পড়ে যারা তাদের নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। এতেই অনেকের আঁতে ঘা লেগে গিয়েছিল।

দুই বছর আগে দূর্গা পূজার সময় একটা পোস্ট দিয়েছিলাম এরকম: আমার নাস্তিক হিন্দু বন্ধুদের অনেকে একদিনের জন্য এখন হিন্দু হয়ে যাবে…। আমার নিন্দুকদের সুবিধা হচ্ছে আমার আইডি যেহেতু থাকে না তাই এই রকম দুই লাইনের পোস্ট কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। তারা তাই দেখাতে পারে কেবল ঈদ পালন নিয়ে আমার চুলকানি!

ঈদ পালন নিয়ে দুটি পোস্ট লিখেছিলাম। দ্বিতীয় পোস্টে বিস্তারিতভাবে বলেছিলাম ঈদ পূজা ক্রিসমাসের সামাজিক কিছু এফেক্ট আছে যা থেকে নাস্তিক বিধর্মী কেউ এড়াতে পারে না। কিন্তু ধর্মীয় এইসব অনুষ্ঠানের ধর্মীয় নিয়ম পালন করা তো নাস্তিকের জন্য কোন যুক্তিই নেই। ঈদের সেমাই খাওয়া, সামাজিকতার জন্য ছেলেমেয়েদের জন্য ঈদের জামা কেনা- এটা নিয়েও কোন কথা নেই। কিন্তু ঈদের নামাজ পড়ে সেই ছবি ফেইসবুকে পোস্ট করলে আপনাকে ভন্ড বলবো না? নিশ্চয় পারিবারিক চাপে এই ছবি পোস্ট করতে আপনি বাধ্য হোননি?

তারপর থেকে আঁতে ঘা লাগাদের জ্বলুনি দেখার মত! ঈদ পালন করেছে আমার লিস্টে শত শত বন্ধু আছে। আমি তো কাউকে আনফ্রেন্ড করিনি। তাহলে কেউ কেউ প্রচার করছে ঈদ পালনের জন্য নাকি তাদেরকে আনফ্রেন্ড করেছি! এরা জানে না আমি কখনোই বেছে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট নেই না। নিজের সমমানের লোক ফ্রেন্ডলিস্টে নিয়ে পোস্ট অনলি ফ্রেন্ড করে পোস্ট দিলে কি লাভ হবে? যারা এখনো অন্ধকারে আছে তাদেরকেই তো আমার লেখা পড়াতে চাই। ফলে লিস্টে আমার ধার্মিক, কট্টর ধার্মিক, জঙ্গি, বিপ্লবী, নাস্তিক, জাতীয়তাবাদী- এমন কেউ নেই যে রাখিনি। ফলে তাদের ঈদ পালনের ছবি আমার কাছে আসে। তাদের পূজার ছবি আমার কাছে আসে। তাদেরকে ধরে ধরে কি আমি আনফ্রেন্ড করেছি?

আমার কমেন্টে আমাকে নিয়ে সমালোচনা যারা করে বছরের পর বছর তাদের কাউকে ব্লক করি না। ভিত্তিহীন কমেন্ট করলেও না। কিন্তু ফ্রেন্ডলিস্টে থাকার একটা মানে আছে। আমি কোন পোস্ট অনলি ফ্রেন্ড দিলেও সেটি তারা দেখতে পাবে। তো আপনি আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থেকে যদি মনে করেন আমি আরএসএসের টাকা পেয়ে লিখি, আমার কোন নৈতিকতা নেই, আমি মিথ্যা  কথা লিখি- তাহলে বলেন আপনি এমন একজনের ফ্রেন্ডলিস্টে থেকে তার লেখা পড়বেন কেন? কোন ভাড়াটে লেখকের লেখা কি পড়ার দরকার আছে? একান্তই পড়তে চাইলে ফলো থেকে পড়ুন। আপনি তো আমার সমালোচনা করেনি। আপনি ফৌজদারি অভিযোগ করেছেন আমার উপর! আরেক দেশে গুপ্তচরী করা তো একটি অপরাধ। আপনার উচিত তথ্য প্রমাণসহ সেটি প্রমাণ করা। সেটি প্রমাণ করছে না কেন?

ভন্ডদের ঈদের ধর্মীয় দিক পালন নিয়ে পোস্ট করায় কেউ কেউ আমাকে নাস্তিক ধর্মের নবী বলেছেন। দাবী করেছেন ঈদ পালনের অপরাধে তাকে আনফ্রেন্ড করা হয়েছে। তিনি যে মিথ্যা বলছেন তার পোস্টেই মানুষ সেটি বলেছেন। এরকম মিথ্যাচার করার আগে আমার সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল না? সমালোচনা আর অন্যের নামে গীবত করা কি এক? তবু আমি কাউকে ব্লক করি না। এগুলোকেও বাক স্বাধীনতার পর্যায়ে রেখে তাদেরকে ফলো করে আমার লেখা পড়তে দিতে চাই। আমাকে হিন্দুত্ববাদী, মোদির টাকায় খাই বলা কমেন্টকারীরা আমি আইডি হারালে নতুন আইডি করলেই তারা এড রিকোয়েস্ট পাঠায়। আমিও নেই। গত এক দশকে এটা হয়ে আসছে। এর মানে হচ্ছে, আমাকে মোসাদের এজেন্ট, সিআইএ’র এজেন্ট, আরএসএস র এজেন্ট বলা যায় কিন্তু উপেক্ষা করা যায় না…।

আমি খুবই বিব্রত নিজেকে নিয়ে কিছু বলতে হলো বলে। এইসব বিষয়ে এটাই আমার শেষ পোস্ট। আমাকে যার যেমন মনে হয় সেটা তাদের স্বাধীনতা। আমি কেবল আমার লেখাটাই লিখে যাবো। কে কি ভাবলো, কি বলল কিছু যায় আসে না। আনফ্রেন্ড করায় যারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের কাছে আমি দুঃখিত। তারা আবার রিকোয়েস্ট পাঠালে প্রতিবার যেমন করে গ্রহণ করি সেভাবেই করা হবে। আনফ্রেন্ড ব্লক কাউকেই আর করা হবে না।

ভালোবাসা।



Leave a comment

About Me

সুষুপ্ত পাঠক aka Susupto Pathok is a blogger. He wrote anti-fundamentalist, anti-nationalist, anti-religious writings. Writes in favor of humanism, gender equality, non-communal society.

Newsletter

https://www.facebook.com/profile.php?id=100089104248214