আওয়ামী লীগ বিএনপি’র কর্মী সমর্থক ভোটারদের মুসলমান হিসেবে হাদিস কুরআনের উপর যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম এটি একদম ইসলাম কম জানে এমন মুসলমানও জানে। তবু শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা বাংলাদেশে অতুলনীয়। ইসলামে সংগীত সিনেমা নিষিদ্ধ। তারপরও কি মুসলিম বিশ্বে সিনেমা সংগীতের জনপ্রিয়তা কম?
শেখ হাসিনা যতদিন থাকবে ততদিন নারী নেতৃত্ব হারাম এটি কেউ বলবে না। ভয়ে বলবে না। বিকল্প নেই বলে বলবে না। পরিস্থিতি নেই বলে বলবে না। কিন্তু তিনি না থাকলে তার দলই সবার আগে এটা বলা শুরু করবে। লীগের তৃণমূল দেখলে হেফাজত ইসলামই লজ্জ্বা পায়!
আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে ফাতেমা জিন্না ভোটে দাঁড়িয়েছিল। তিনি নারী, জিন্নার বোন। ইসলামে তার নেতৃত্ব হারাম। কিন্তু তিনিই আইয়ূবের বিরুদ্ধে ভোট ক্যাম্পেইনে বলতেন, ইসলাম বিপন্ন। আইয়ুবকে সরাতে হবে। ইসলামে বিরুদ্ধে করা আইয়ুবের আইন সংশোধন করতে হবে!
আইয়ুব খান ইসলামি পাবিবারিক আইন সংশোধন করেছিলেন। মুসলমান নারীদের বাপের কাজ করে দিয়েছিলেন। বিয়ে রেজিস্ট্রি, তালাক দেয়ার অধিকার আইয়ুব খান দিয়েছিলেন। মুসলিম মতে বিয়ে করতে সাক্ষি লাগে। নারীরা তালাক দিতে পারবে না। পুরুষ তালাক দিবে এবং মুখে তিনবার বললেই সেটা কার্যকর। আইয়ুব খান বললেন মুখে বললে হবে না। আর বিয়ের জন্য সরকারী সার্টিফিকেট লাগবে যাতে বিয়ে করে অস্বীকার করতে না পারে। আইয়ুব খান আইন করলেন ছেলেদের বিয়ের বয়স ১৮ আর মেয়েদের পনেরো হতে হবে। ইসলামী আইনের পরিপন্থী এই আইন করায় সারা পাকিস্তানে ক্ষোভ নেমে আসে। ভাগিস্য ফাতেমা জিন্না পাশ করেনি। তাহলে আজো বাংলাদেশে নারীরা তালাক দিতে পারত না। সম্পত্তিতে দাদার আগে পিতা মারা গেলে সম্পত্তি থেকে সন্তান বঞ্চিত হত। আইয়ুব এগুলো সংশোধন করেছিলেন। এ জন্য পাকিস্তানের আলেমরা ফতোয়া দিয়েছিলেন, আইয়ুব ইসলামের জন্য হা্রাম হয়ে গেছে। ফাতেমা জিন্নাও ইসলামের হুকুমতে হারাম নেতৃত্ব, তবু বড় হারামকে সরাতে ছোট হারামকে গ্রহণ করতে হবে।
মুসলমানদের কাছে বর্তমানে গান বাজনা সিনেমা নারী কর্মসংস্থান এগুলো ‘ছোট হারাম’। তারা মনে করে ইসলামী শাসন আসলে এগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এখন যখন বন্ধ হচ্ছে না তখন চলুক। প্রতিটি মুসলমান এভাবেই চিন্তা করে। এরকমই তাদের রাজনৈতিক সামাজিক চিন্তা।
নারী ফুটবল ও নারী ক্রিকেটও বাংলাদেশ মেনে নিয়েছে কারণ ফিফা ও আইসিসি বেঁধে দিয়েছে নারী টিম রাখতে হবে। না হলে নিষিদ্ধ হতে হবে। এ জন্য মেনে নেওয়া। তাই বলে তারা বিশ্বাস করে না নারীদের খেলাধূলার কোন অধিকার আছে। এসব ইসলাম বিরোধী। অমুসলিমরা যেহেতু বিশ্ব চালায় তাই এসব মানতে হবে। ইমাম মাহদি যখন আসবে তখন ফিফা আইসিসির কোন আইন থাকবে না। তখন মেয়েদের চুলের মুঠি ধরে ঘরে ঢোকানো হবে। মুসলমানদের সাইকোলজি অমুসলিমরা জীবনেও বুঝতে পারবে না। মেয়ে ফুটবল টিম যখন ভারতের মেয়ে টিমের সঙ্গে খেলে তখন গ্যালারিতে দর্শকে ভরে যায়। হুজুর সুরতের দর্শক পর্যন্ত লাফাতে থাকে। এরা কেউ মেয়েদের খেলাধূলাকে সমর্থন করে না। আপনি এই বালের সাইকোলজি কি করে বুঝবেন? মিশেল ফুকো পড়ে মুসলমানের মন বুঝতে না আসাই ভালো!
Leave a comment